আমরা বাড়িতে প্রতিদিনই কম বেশি খেয়ে থাকি। আর বাড়িতে ছোট শিশু থাকলে তো কথাই নেই। ডিম রান্না করতেই হবে বা ভাজি, পোচ করতে হবে শিশুর জন্য৷ কিন্তু আমরা কি জানি কোন ডিমটা ভালো, সাদা ডিম নাকি লাল ডিম? কোন ডিম খাওয়া বেশি উপকারী? যাই হোক এ নিয়ে দ্বন্দ্ব, তর্ক বা মতের শেষ নেই। এমনিতেই ডিম প্রায় সব বাড়িতে প্রতি দিনই কম-বেশি রান্নার প্রয়োজন পড়ে। আর খাবার বেলায় বা সন্তানকে ডিম দেওয়ার সময় তাই অভিভাবকরা চিন্তায় থাকেন, আসলে কোন ডিম কিনবেন? অনেকেরই ভাবনা লাল ডিমে পুষ্টিগুণ বেশি। কেউ বা ভাবেন সাদা ডিমে।
আসুন জেনে নেয়া যাক কেন ডিমের রঙ দুই রকম হয়-
বিজ্ঞানীদের মতে, সাদা ডিম পাড়ে সাদা পালকের মুরগিরা। লাল ডিম পাড়ে গাঢ় রঙের পালকের মুরগি। এই দুই ধরনের মুরগির ক্ষেত্রে কি পুষ্টিগুণ বদলে যেতে পারে?
না, ডিমের রঙ বিবেচনায় পুষ্টি কম বেশি হয় না৷ সম্প্রতি এই নিয়ে গবেষণা করেছেন কর্নেল ইউনিভার্সিটির প্রাণীবিজ্ঞানের ভিজিটিং ফেলো ট্রো ভি বুই। তিনি ভারতের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই দুই ধরনের ডিমে পুষ্টিগুণে বিশেষ কোনও তফাত নেই। তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন নিউ ইয়র্কের এক দল গবেষকও। তবে তাদের মতে, লাল ডিমে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড একটু বেশি রয়েছে। কিন্তু এই পরিমাণ এতই অল্প যে তাতে খুব একটা তফাত পড়ে না।
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-র মতে, একটি বড় (৫০ গ্রাম ওজনের) ডিমে ৭২ ক্যালোরি ও ৪.৭৫ গ্রাম ফ্যাট ( যার মধ্যে ১.৫ গ্রাম মাত্র দ্রবণীয়)। সাদা ও লাল ডিমে এই পুষ্টিগুণের পরিমাণ প্রায় এক।
তবে এর সাথে কিছুটা ভিন্ন মত প্রকাশ করেন কলকাতার পুষ্টিবিদ সুমিত ঘোষ। তার মতে, লাল ডিমে যেটুকু ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি, সেটুকুও তো শরীরের পক্ষে লাভজনকই। তবে সে কথাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন দিল্লির পুষ্টিবিদ গীতা মালহোত্র। তার মতে, ঐটুকু ফ্যাটি অ্যাসিড সেভাবে আলাদা করে কোনও ভূমিকা পালন করতে পারে না।
সুতরাং, দুই ধরনের ডিমের খাদ্যগুণই যে প্রায় সমান সে কথাই মেনে নিচ্ছেন সব চিকিত্সারা। তাই ডিম খাওয়ার আগে ভাবনা চিন্তার কোন দরকার নেই৷ যে ডিমই খান পুষ্টি মান একই পাবেন৷