তথ্য গুলি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে উপস্থাপন করলাম৷ এখান থেকে সহজেই বুক রিভিউ বা পুস্তক পর্যালোচনার ধারনা নিতে পারবেন৷ তাই আসুন জেন নেই Book review বা পুস্তক পর্যালোচনা সম্পর্কে টুকিটাকি বিষয়গুলো যা আপনার পুস্তক পর্যালোচনাকে মান সম্মত করে তুলতে পারে৷
বুক রিভিউ বা পুস্তক পর্যালোচনা লেখার বিশেষ কোন বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। তবে কিছু বিষয় আছে যার অনুপস্থিতিতে বুক রিভিউ বা পুস্তক পর্যালোচনা করলে সেটা রং হারাবে। সিনেমার ট্রেইলার দেখে যেমন আঁচ করে নেই সিনেমাটা কেমন হবে, রিভিউ আর স্যাটায়ার দেখে যেমন বুঝতে পারি তার দূর্বলতা, সফলতা গুলো তেমনি বুক রিভিউ আসলে একটি বই দেখতে কেমন, এর বিষয়বস্তু কী? লেখক, প্রকাশকের পরিচিতি? মুদ্রণ, পৃষ্ঠা মূল্য এসব নানা জিনিসের তথ্য জানিয়ে একটি বুক রিভিউ বা পুস্তক পর্যালোচনা হয়।
যাই হোক ধাপে ধাপে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো-
প্রচ্ছদঃ
বইয়ের কভার বা মলাটের প্রচ্ছদ কেমন তা নিয়ে বলা প্রয়োজন। অনেক সময় প্রচ্ছদ থেকে বইয়ের আলোচ্য বিষয়বস্তু জানা যায়।
ধরনঃ
বইটি কোন ধরনের এটা নিয়ে তথ্য থাকবে। এটা কি ভ্রমন কাহিনি, নাকি থ্রিলার, নাকি অ্যাডাল্ট এসব তথ্য উল্লেখ করতে হবে।
পরিচিতিঃ
লেখকের নাম সাথে তার অর্জন থাকলে উল্লেখ করতে হবে। বইটি অন্য ভাষা থেকে অনুবাদিত হলে অনুবাদকের নাম উল্লেখ করতে হবে।
অর্জনঃ
বইটির নিজস্ব কোন অর্জন থাকলে সেটা নিয়েও দুই চার লাইন কিছু লিখতে হবে৷
রেটিংঃ
বইটি সম্পর্কে ব্যক্তিগত রেটিং করা যেতে পারে। ৫ অথবা ১০ এর মধ্যে করলে ভালো হয়।
সংক্ষিপ্ত আলোচনাঃ
বইয়ের ভাবাংশ তথা গল্পের কাহিনীকে খুব ছোট করে তুলে ধরতে হবে। বইয়ে কোন চুম্বক অংশ থাকলে তার পেইজ নাম্বার উল্লেখ করেও দেয়া যেতে পারে।
ভাষাঃ
বই পড়ে যেন পাঠক সাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারেন তাই লেখক ভাষার প্রাঞ্জলতা গুণ কতটুকু ধরে রেখেছেন তা তুলে ধরতে হবে৷
বানানঃ
বানান ভুলে ভরা বই যেকোন পাঠকের পড়ার আগ্রহ কমিয়ে দেয়। লেখক সে দিকে কতোটুকু খেয়াল রেখেছেন তা তুলে ধরা জরুরী।
প্রাপ্তিস্থান ও মূল্যঃ
বইয়ের মূল্য দেয়া জরুরী৷ বইটি কোথায় কোথায় পাওয়া যেতে পারে এবং তার কোথায় কেমন মূল্য তা জানানো যেতে পারে। প্রয়োজনে অনলাইন কপির লিংক বা ডাউনলোড লিংক দেয়া যেতে পারে।
আকারঃ
বইয়ের মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা বা বইয়ের আকার উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া বইয়ের বাঁধাই, মুদ্রণ, সংযোজিত ছবির মান এসব বিষয় নিয়ে ও লিখতে হবে।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
যে বইটি রিভিউ করছেন তা নিয়ে কোন ব্যক্তিগত মতামত থাকলে সেটা একেবারে শেষে উল্লেখ করা যেতে পারে।
সবশেষে বলবো একটা বই রিভিউতে আলোচনা, সমালোচনা সব মিলিয়ে রিভিউটির গ্রহণযোগ্যতার খেয়াল রাখাটা জরুরি।
পুস্তক পর্যালোচনা লেখার নিয়মঃ
বুক রিভিউ বা পুস্তক পর্যালোচনা লিখার বাস্তবে কোনো ব্যকরণ নাই। তবে ভালো রিভিউ লিখতে হলে আমাদের অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে রিভিউ লিখার মাধ্যমে আমরা যদি একটা বইয়ের সারসংক্ষেপ স্মার্টলি দক্ষতার সাথে তুলে ধরতে চাই এবং যথাসম্ভব বেশিসংখ্যক পাঠকের মানসপটে সেই বই সম্পর্কে নিখুঁত চিত্র আঁকতে চাই, তাহলে আমাদের কিছু সূত্র মেনে চলতেই হবে।
এখানে কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো
প্রথমতঃ কোনো বুক রিভিউ করতে হলে যথেষ্ঠ মনোযোগের সাথে সেটি পড়তে (অধ্যয়ন) হবে। প্রয়োজনীয় নোট করতে হবে পড়ার সময়ই।
দ্বিতীয়তঃ নিজের স্টাইলে বইকে না বুঝে, লেখকের স্টাইলে বুঝতে হবে। লেখকের ইন্টেনশন ধরার চেষ্টা করতে হবে।
তৃতীয়তঃ বই পড়ার সময় নির্মোহ থাকা। বই, বইয়ের লেখক এবং প্রকাশনী সংস্থার ব্যাপারে প্রি-ডিটার্মাইন্ড ভালো লাগা, খারাপ লাগা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে হবে।
চতুর্থতঃ আগেই নির্ধারণ করে নিতে হবে বুক রিভিউ লিখবেন কাদের জন্য? সাধারণ পাঠকদের জন্য, ক্রেতাদের জন্য, বইয়ের তথ্য শেয়ার করার জন্য, নাকি বই সম্পর্কে আগ্রহী করার জন্য। তাই সেই আলোকে নোট নেওয়া দরকার।
এরপর বই থেকে নির্দিষ্ট কোনো লাইন কোড করে অথবা বই সম্পর্কে দুটো দারুণ লাইন লিখে রিভিউ শুরু হতে পারেন। যেন পাঠক রিভিউ পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
বইয়ের মূল রিভিউয়ে যা খেয়াল রাখতে হবেঃ
০১. বইয়ের সংক্ষিপ্তসার, অনধিক ২৫০ শব্দ৷
০২. বই সম্পর্কে নিজের মন্তব্য৷
০৩. বইয়ের ভালো দিক/ খারাপ দিক৷
০৪. কেন বইটি অন্যদের পড়া উচিৎ৷
০৫. লেখক, অনুবাদকের পরিচিতি ও কর্মযজ্ঞ৷
একটি কথা মনে রাখবেন, লেখক যা লিখেছেন, তা রিভিউ করুন। লেখক অথবা বই থেকে যা আপনি প্রত্যাশা করেছিলেন তার রিভিউ লিখবেন না৷ ঠিক ততটুকুই লিখুন যতটুকু লেখক কভার করেছেন। ইলাস্টিকের মতো টেনে বড় করবেন না৷ এমনকি লেখক ও বইয়ের মূল ফোকাসটা ধরুন এবং হিংসা-বিদ্বেষ, ঈর্ষা এসব কিছু একদম ভুলে যান৷ লেখক, অনুবাদক ও প্রকাশনীর প্রতি মোহ ও ভালোবাসার টানে অহেতুক প্রশংসা পরিহার করুন৷
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট ৷