ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক পিল এমন একটি ঔষধ যা অরক্ষিত সহবাসে ডিম্বানু ও শুক্রানুর নিষিক্তকরণ প্রতিরোধ করে। আর এটি কার্যকারীতা প্রদর্শন করে থাকে তিন দিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত ৷
কখন ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক ব্যবহার করবেন ?
অরক্ষিত সহবাসের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই জন্মনিরোধক ট্যাবলেট ব্যবহার করতে হবে, তবে সহবাসের ১২ ঘণ্টার মধ্যে হলে সবচেয়ে ভাল হয় কিন্তু ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের পরে নয়। তবে পিউলি ১২০ ঘন্টা বা পাঁচ দিন পর্যন্ত সেবন করা যায় ৷ কিন্তু সময় যত বেশি হবে ঔষধ তত কার্যকারীতা কম প্রদর্শন করে থাকে ৷ তাই যত তারাতারি সম্ভব ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক পিল সেবন করা কর্তব্য ৷
কোন কোন ক্ষেত্রে ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক পিল ব্যবহার করা করতে হয় ?
১। সহবাসের সময় আপনি বা আপনার সঙ্গী কেউই যদি কোন জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার না করেন।
২। যদি কোন মহিলা পরপর তিন দিন বা ততোধিক নিয়মিত জন্মনিরোধক ট্যাবলেট খেতে ভুলে যান ।
৩। যদি সহবাসের সময় পুরুষ সঙ্গী কনডম সঠিকভাবে ব্যবহার না করে থাকেন অথবা কনডম ফেটে গিয়ে থাকে।
৪। যদি কোন মহিলার জরায়ুতে অবস্থিত জন্মনিরোধক (আই,ইউ,ডি) স্থানচ্যুত হয়ে যায়।
৫। যদি নারীর যোনিতে অবস্থিত ডায়াফ্রাম অথবা জন্মনিরোধক ক্যাপ সরানো হয়ে থাকে।
৬। যদি আপনি মনে করেন যে, coitus interruptus অকার্যকর হয়েছে এবং Rhythm method অনুসরণ কালীন সময়ে যদি সহবাস করে থাকেন ।
৭। কোন মেয়ে যদি ধর্ষন হয় তাহলে তার অনাকাঙ্খিত গর্ভধারন রোধ করতে ৷
কিভাবে এ ওষুধ সেবন করতে হবে ?
সেবন মাত্রাঃ
এ চিকিৎসায় ১ টি নরপিল (লিভোনরজেস্ট্রেল) ট্যাবলেট সেবন করা প্রয়োজন। ট্যাবলেটটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেবন করতে হবে যা অরক্ষিত যৌন মিলনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এবং কোনক্রমেই ৭২ ঘণ্টার পরে নয় ৷ আর ভাল ফল পেতে প্রথম ট্যাবলেট সেবন করার পর ১২ ঘন্টা পর আবার একটি ট্যাবলেট সেবন করতে হবে ৷
তবে হাতের কাছে যদি নরপিল বা এই গ্রুপের ঔষধ পাওয়া না যায় এবং ৭২ ঘন্টা পার হয়ে যায় তাহলে পিউলি ( ইউলিপ্রিস্টল) সেবন করতে হবে ৷
মাসিক চক্রের যে কোন সময়ে ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক পিল সেবন করা যেতে পারে। আর ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক ট্যাবলেট সেবনের পর পরবর্তী মাসিক পর্যন্ত একটি সাময়িক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেমন: কনডম, শুক্রানুনাশক সারভাইকেল ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে ৷
নিয়মিত হরমোনাল জন্মনিরোধক ব্যবহারের সময় ইমারজেনসি পিল সেবন অনুপযোগী নয়। তবে জন্মনিরোধক ট্যাবলেট সেবনকালীন সময়ে এই ওষুধ ব্যবহার করে থাকলে এই চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত জন্মনিরোধক ট্যাবলেটগুলি সেবন করতে হবে।
** সেবন পদ্ধতি **
নরপিল বা পিউলি মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট। এক গ্লাস পানির সাথে এই ট্যাবলেট সেবন করা উচিত।
মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনে কি করা উচিত?
মাত্রাতিরিক্ত ট্যাবলেট সেবনের পরেও কোন বিষক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় নাই।
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমূহঃ
বমি বা বমি বমি ভাব, ঝিমুনিভাব, অবসন্নতা, মাথাব্যথা, পেটে ব্যথার অনুভূতি, স্তনে ব্যথার অনুভূতি, যোনিপথে রক্তক্ষরণ হতে পারে ৷ তবে উপরোক্ত অসুবিধা সমূহ ব্যতিত অন্য কোন অযাচিত প্রতিক্রিয়া ঘটে থাকলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারকে অবহিত করুন।
মনে রাখা উচিৎঃ
নরপিল (লিভোনরজেস্ট্রেল) এবং পিউলি (ইউলিপ্রিস্টল) নিয়মিত জন্মনিরোধক পিল নয়। তাই এটি নিয়মিত সেবন করা থেকে বিরত থাকুন ৷
লিভোনরজেস্ট্রেল ব্যবহারে মাসিক স্রাব স্বাভাবিক এবং কাঙ্খিত সময়ে হয় ৷ তথাপি কারো কারো ক্ষেত্রে মাসিক স্রাব নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরেও হতে পারে। এই ওষুধ খাওয়ার পরে যদি নির্ধারিত সময়ে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হয় অথবা ঋতুস্রাব যদি ৫ দিন পিছিয়ে যায় তবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিতে হবে।
ইমার্জেন্সি জন্মনিরোধক যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধ করে না এবং যে ক্ষেত্রে যৌনবাহিত রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি সে ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ওষুধ সেবনের ২ ঘণ্টার মধ্যে বমি হলে সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি লিভোনরজেস্ট্রেল ট্যাবলেট সেবন করতে হবে।