বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করার কথা বললে যে কোন পক্ষ, বর বা কনে পক্ষ বেঁকে বসতে পারে ৷ এর কারন হচ্ছে অজ্ঞতা বা ভুল বুঝা ৷ কারন বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করার কথা বললে ছেলে বা মেয়ে ভেবে বসেন হয়ত আমাকে সন্দেহ করা হচ্ছে ৷ আমার চরিত্র নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে কিংবা আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না ৷ তবে সবাই এমন ভাববে তা নয় ৷ যারা বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার গুরুত্ব বুঝে এমন লোকের সংখ্যা হাতে-গোনা কয়েকজন। যাই হোক বিয়ের আগে পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান মেলানোর পাশাপাশি রক্তপরীক্ষা করাটাও খুব জরুরী ৷ নিচে কিছু কারন তুলে ধরা হল-
১) এই রক্ত পরীক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো ভবিষ্যতে সন্তান সুস্থ হবে কি না- তা দেখা। তাই হবু মা ও বাবার নির্দিষ্ট কিছু রক্তপরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
২) তাছাড়া দুজনের ব্লাডগ্রুপ এক রকম হলে সমস্যা নেই। কিন্তু পজিটিভ ও নেগেটিভ হলে সমস্যা৷ তাই আগে থেকেই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে দেখা উচিত কার রক্তের গ্রুপ কি ?
৩) এছাড়া ভবিষ্যতে যদি কোনো অসুখে বা দুর্ঘটনায় হঠাৎ করে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে ব্লাড গ্রুপ জানা থাকলে বাড়ির লোকজনকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হবে না।
৪) টিসি. ডিসি, ইএসআর , কোলেস্টেরল, Rh ফ্যাক্টর, এইচআইভি, আয়রন লেভেল ইত্যাদি কিছু রুটিন পরীক্ষা ছেলে এবং মেয়ে উভয়েরই করানো উচিত। তাহলে প্রথম থেকেই একটা মেডিকেল হিস্ট্রি থাকবে।
৫) এছাড়াও থাইরয়েড, সুগার, থ্যালাসেমিয়া, এসটিডি (সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ), হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি বা টিউবারকুলোসিসের মতো সমস্যা রয়েছে কি না তা জানার জন্য বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষা আবশ্যক।
যদি কেউ থ্যালাসেমিয়ার ক্যারিয়ার বা মেজর হন, তাহলে সে ভবিষ্যতে সন্তান পরিকল্পনা করতে পারবে কিনা, বা সন্তান জন্মালেও সে কতটা সুস্থ হবে, সে সম্পর্কে আগে থেকেই জানা যাবে রক্ত পরীক্ষা করলে ৷ কিংবা হেপাটাইটিস বি/সি পজিটিভ হলে তা স্বামী বা স্ত্রীর দেহে সংক্রমিত হবে এবং বাচ্চার শরীরেও তা চলে আসবে ৷ তাই রক্ত পরীক্ষা করা জরুরী৷
৬) সর্বোপরি অনেকেই হয়তো বংশানুক্রমিক ভাবে কোনো রোগে আক্রান্ত। কিন্তু কোনো লক্ষণ না থাকায়, তা জানতে পারেননি। তাই বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করার মাধ্যমে এই সবকিছুই জেনে নেয়া প্রয়োজন।
৭) যদি পেলভিক ইনফেমেটারি ডিজিজের মতো কোনো যৌন সমস্যা থাকে, তাহলে কিন্তু সন্তান নেওয়ার সময় তা টের না পাওয়া গেলে পরে মারাত্মক জটিল হতে পারে পরিস্থিতি।
তাই কোনোরকম ইগো বা ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ না রেখে, বিয়ের আগেই করিয়ে নিন আপনার প্রয়োজনীয় চেক আপ। পরে আফসোস করার থেকে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া ভাল৷