তথ্য ও প্রযুক্তির মশাল জ্বলে উঠুক হাতে হাতে

জেনে নিন নারীদের যৌন অনিহার কারন ও প্রতিকার






অনেক পুরুষই অভিযোগ করেন যে তার স্ত্রী যৌনতার ক্ষেত্রে শীতল সাড়া প্রদান করে থাকেন। অনেকই মত ব্যক্ত করেন "সে এমনিতে খুবই ভালো স্ত্রী ও প্রেমিকা, কিন্তু যৌনতার কথা এলেই কেমন জানি হয়ে যায়। শারীরিক কোন সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও বিছানায় শীতল যৌন আচরণ করে এবং অনীহা দেখায় কিংবা বলে দেয় আমি যথেষ্ট সক্রিয় নই।" আর এর ফলে দাম্পত্যে অশান্তি অবধারিত ভাবেই হচ্ছে।
আসলে আমাদের সমাজে অনেক নারী নিজেও বোঝেন এবং জানেন নিজের এই শীতল যৌন সমস্যাটা, কিন্তু কাকে বলবেন বা কী করবেন, সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না।

এর পেছনে রয়েছে যে কারনঃ
নারীর শীতল যৌন আচরণের পেছনে যে সর্বদা শারীরিক বা মানসিক কোন গুরুতর সমস্যা থাকবে, বিষয়টা একেবারে তেমন নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিষয়টি স্বামী স্ত্রীর মাঝে সাধারণ বোঝাপড়ার অভাবে হয়ে থাকে। আবার বয়সের পার্থক্য কিংবা অতীতের কোন ঘটনার কারণে এমনটি হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে একটু সহমর্মিতা ও ভালোবাসা দিয়েই এই সমাধান করা সম্ভব।


স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল যৌনতার নয়, ভালোবাসার। দুজনের মাঝে মানসিক ভালোবাসার একটি মজবুত সেতু রচনা করুন। দেখবেন যৌনতা এমনিতেই উচ্ছল হয়ে উঠেছে। মানসিক প্রেম ভালবাসা যৌনতায় খোলামেলা ও প্রাণবন্ত হতে পুরোপুরি সহায়ক। তাই আপনি আপনার সঙ্গীকে ভালবাসা দিয়ে জয় করুন, তাকে আগলে রাখুন, বেশি করে আদর স্নেহ দেন, দেখবেন তার যৌন আচরন আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে উঠতেছে।

অতীতের কোন কাহিনীঃ
নারী হয়ে জন্মালে ছেলেবেলায় যৌন হয়রানির সম্মুখীন হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যপার এবং এই কারণেও অনেক নারী যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। পুরুষের আগ্রাসী মনোভাবের কারনে ভীতির জন্ম নেয় মনে মাঝে যৌনতা ও পুরুষ সম্পর্কে। এক্ষেত্রে আপনিই একমাত্র ভরসা যে কিনা ভালোবাসা দিয়ে শীতল যৌন সমস্যার ভীতি দূর করতে পারে। আপনার ভালোবাসায় আপনার প্রতি তার আস্থা জন্মাবে তার এবং অতীতের স্মৃতি মুছে যাবে।

ক্লান্তি ও মানসিক চাপঃ
আপনি হয়তো ভাবছেন দিন শেষে বাসায় এসেছি, ও কেন আমাকে সঙ্গ দেবে না? কিন্তু এই ভাবনার মাঝে আপনি ও ভুলে যাচ্ছেন যে সারাটা দিন আপনার স্ত্রীও মারাত্মক পরিশ্রম করে সারাটি দিন অতিবাহিত করে এখন আপনার কাছে এসেছেন। হতে পারে আপনার স্ত্রী একটু বেশী ক্লান্ত হয়ে গেছেন বলেই যৌনতায় বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেছেন না।

সংসার, সন্তান, শ্বশুরবাড়ি, হয়তো নিজের কোন ব্যক্তিগত কষ্ট কিংবা অফিসের স্ট্রেস এরকম কত কিছুই থাকতে পারে একজন নারীর জীবনে। আর এই ক্লান্ত দেহে মনের মাঝে অনেক ভাবনা নিয়ে আসলেই যৌনতায় মেতে ওঠা যায় না। অন্তত নারীরা তা কখনোই পারেন না।
এক্ষেত্রে দুজনে কোথাও বেড়িয়ে আসুন, সমস্যা মিটে গেলেও যেতে পারে। আপনাদের যৌন জীবনে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে একান্তে কিছুটা সময় বা ছুটি কাটাবার সুযোগ হলে।

যৌনতা সম্পর্কে ধারণার অভাবঃ
অনেক নারীই যৌনতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণার অভাবে বুঝে উঠতে পারেন না আসলে তার কী করা উচিৎ আর কীভাবে সেটা করবে। আবার আমাদের গ্রাম বাংলার অনেক নারী আছেন লাজুক টাইপের। তারা ভাবেন যৌনতার ক্ষেত্রে বেশী সক্রিয় হলে তার স্বামী তাঁকে বেহায়া বা নির্লজ্জ ভাববেন। আর একারনেই অনেক নারী বিছানায় যৌন আচরণ প্রদর্শন করতে পারেন না।
আপনি আপনার স্ত্রীর এইসব ভুল ধারণা দূর করে দিন নিজেই। তাঁকে পর্যাপ্ত যৌন শিক্ষা দিতে পারেন। নিজে মুখে বলতে সংকোচ বোধ করলে বা বলতে না পারলে নানা রকম বইপত্র কিংবা ম্যাগাজিন কিনে দিতে পারেন। এতে করে আপনার স্ত্রীর যৌন আচরণে পরিবর্তন আসবে। আর আপনি যা জানেন, সেটা স্ত্রী জানলে আপনাকে তার বুঝতে সুবিধা হবে।

কি মনে করবে এমন মনোভাবঃ
আমাকে কি ভাববে এমন দ্বিধা অনেক সময় নারীর যৌন অনিহার কারন হতে পারে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে যৌনতায় সক্রিয় হন না, কারণ একটাই আর তা হলো নিজের উপরে যথেষ্ট আস্থার অভাব। নিজেকে যথেষ্ট আকর্ষণীয় মনে না করা, কিংবা স্বামী হাসবেন কিনা, কিংবা স্বামী এমন আচরণ পছন্দ করবেন কিনা এমন ভেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখা ।
এক্ষেত্রে আপনি তার জড়তা কাটাতে সাহায্য করুন, বিশেষ মুহূর্তে পরার জন্য আকর্ষণীয় পোশাক কিনে দিন আর মাঝে মাঝেই জানান যে কী করলে তাঁকে আরও ভালো লাগবে এবং আপনাদের সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। দেখবেন এভাবেই তার দ্বিধা কেটে যাবে ।

এরপরেও যেকোন নারীর যৌন শীতলতার অন্তরালে থাকতে পারে গুরুতর মানসিক কিংবা শারীরিক সমস্যা। সাধারণভাবে এই সমস্যার সমাধান না হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এক্ষেত্রে লজ্জা বা ভয় পাবার কিছুই নেই।