তথ্য ও প্রযুক্তির মশাল জ্বলে উঠুক হাতে হাতে

গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২।

আজকে সরকারী চাকুরীজীবীদের জন্য গুরুত্বপূর্ন একটা অধ্যাদেশ নিয়ে হাজির হলাম। যাদের দরকার কপি করে রাখতে পারেন।
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম: এই অধ্যাদেশ গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ নামে অভিহিত হইবে।
২। সংজ্ঞা: এই অধ্যাদেশে প্রসঙ্গের বা বিষয়ের পরিপন্থি কিছু না থাকিলে:
ক) ‘কর্তৃপক্ষ' বলিতে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই অধ্যাদেশের আওতায় কর্তৃপক্ষ এর ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষকে বুঝাইবে;
খ) ‘গণ কর্মচারী’ বলিতে প্রজাতন্ত্রের বা বিধিবদ্ধ সংস্থায় কর্মরত কর্মচারীদের বুঝাইবে।
৩। অন্যান্য আইনের উপর অধ্যাদেশের প্রাধান্য: গণ কর্মচারী সম্পর্কিত অন্য কোন আইন, বিধিমালা বা রেগুলেশন অথবা গণকর্মচারীরর চাকরির শর্তাবলীতে যাহা কিছুই বর্ণিত থাকুক না কেন এই অধ্যাদেশ কার্যকর হইবে।
৪। বিনানুমতিতে কাজে অনুপস্থিতির জন্য দন্ড: কোন গণকর্মচারী তাঁহার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এর পুর্বানুমতি ব্যতিরেকে ছুটিতে গেলে বা কর্মে অনুপস্থিত থাকিলে, কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনের অনুপস্থিতির জন্য উক্ত কর্মচারীর একদিনের মূল বেতন কর্তন করিবেন।
৫। বিনানুমতিতে অফিস ত্যাগের জন্য দন্ড: কোন গণ কর্মচারী অফিস চলাকালীন সময়ে তাঁহার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এর পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে অফিস ত্যাগ করিলে, কর্তৃপক্ষ এইরূপ প্রতিক্ষেত্রে একদিনের মূল বেতন কর্তন করিবেন।
৬। বিলম্বে উপস্থিতির জন্য দন্ড: কোন গণ কর্মচারী অফিসে বিলম্বে হাজির হইলে,কর্তৃপক্ষ প্রতি দুই দিনের বিলম্বে উপস্থিতির জন্য একদিনের মূল বেতন কর্তন করিবেন।
৭। অপরাধের পুনরাবৃত্তির জন্য দন্ড: কোন গণকর্মচারী ত্রিশ দিনের ভিতর ৪ বা ৫ বা ৬ ধারায় বর্ণিত অপরাধ একাধিক বার করিলে,কর্তৃপক্ষ আরো অতিরিক্ত সাত দিনের মূল বেতন কর্তন করিতে পারিবেন।
৮। আবেদন পেশ: ৪ বা ৫ বা ৬ বা ৭ ধারার অধীনে কোন গণ কর্মচারীর বেতন কর্তনের আদেশ প্রদান করা হইলে, আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট গণ কর্মচারী কর্তৃপক্ষের নিকট আদেশ পুনঃ বিবেচনার জন্য আবেদন পেশ করিতে পারিবেন এবং তদপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ যেরূপ যথাযথ বলিয়া বিবেচনা করিবেন, সেরূপ শুনানী গ্রহণান্তে আদেশ সংশোধন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।
৯। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সহিত পরামর্শের প্রয়োজন নাই: এই অধ্যাদেশের অধীন কোন বিষয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সহিত পরামর্শের প্রয়োজন হইবেনা।
১০। আদালতের এখতিয়ার খর্ব: এই অধ্যাদেশের অধীন গৃহীত কোন কার্যক্রম বা আদেশ সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।



গণকর্মচারী শৃক্সখলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ সম্পর্কীত নির্বাহী নির্দেশনাঃ
এই অধ্যাদেশ সম্পর্কে স্মারক নং: গঊউ/চঝ/৮২-১০৩,তারিখ: ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৮২ এর মাধ্যমে নিম্নরূপ নির্দেশনা জারি করা হয় :
১। গণকর্মচারীগণের অফিসে সময়মত উপস্থিতি নিশ্চিতকরণে এবং অননুমোদিত অনুপস্থিতি বন্ধ করার লক্ষে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এই অধ্যাদেশ জারি করেন। অফিসে বিলম্বে উপস্থিতি বা অননুমোদিত অনুপস্থিতি বা পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে অফিস ত্যাগের ক্ষেত্রে এই অধ্যাদেশের অধীনে দন্ড প্রদানের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হইয়াছে। এখন হইতে সংশ্লিষ্ট অফিস প্রধানগণ তাঁহার অধীনস্থ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অফিসে সময়মত উপস্থিতি নিশ্চিতকরণে এবং অননুমোদিত অনুপস্থিতির জন্য ব্যক্তিগত ভাবে দায়ী থাকিবেন।
২। সকল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অনতিবিলম্বে অধ্যাদেশের ২ (এ) ধারায় সংজ্ঞায়িত কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করিবেন। অফিসের আকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য একাধিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করা যাইবে।
৩। নির্ধারিত অফিস সময়ের এক মিনিট বিলম্বে উপস্থিত হইলেও এই অধ্যাদেশের আওতায় দন্ড প্রদান করা যাইবে। যানবাহন না পাওয়া, যানবাহন নষ্ট হওয়া, পাবলিক সার্ভিস ট্রান্সপোর্ট দেরীতে পৌঁছানো, অলংঘনীয় ব্যক্তিগত কাজ যুক্তি সংগত কারণ হিসাবে গ্রহণ যোগ্য হইবে না ।
৪। প্রত্যেক অফিসে সাময়িকভাবে অফিস ত্যাগের জন্য একটি রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে। রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ না করিয়া কেহ অফিস ত্যাগ করিতে পারিবে না। উক্ত রেজিস্টারে কর্মকর্তা /কর্মচারীর নাম, অফিস ত্যাগের কারণ, অফিস ত্যাগের সময় এবং অফিসে প্রত্যাবর্তনের সময় লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
৫। কেহ অফিসে উপস্থিত থাকিতে পারিবেন না বা পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে ছুটি ভোগ করিতে পারিবেন না। কেবল অলংঘনীয় কাজ এবং হঠাৎ অসুস্থ্যতা অনুপস্থিতির সন্তোষজনক কারণ বলিয়া গ্রহণযোগ্য হইবে। তবে অলংঘনীয় কাজ সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা এবং হঠাৎ অসুস্থ্যতা অনুমোদিত চিকিৎসকের সার্টিফিকেট দ্বারা প্রমাণিত হইতে হইবে। অভ্যাসগত অপরাধীদেরকে বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণপূর্বক গুরুদন্ড প্রদান করিতে হইবে।
৬। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মাসিক বেতন বিল হইতে দন্ডের অর্থ কর্তন পূর্বক আদায় করিতে হইবে। উক্ত কর্মচারী নিজের বিল নিজে উত্তোলনকারী হইলে, তাঁকে বেতন বিল হইতে দন্ডের অর্থ কর্তন করার নির্দেশ দিতে হইবে এবং নির্দেশের কপি নিরীক্ষা অফিসে প্রেরণ করিতে হইবে। উক্ত কর্মচারী বেতন বিল হইতে দন্ডের অর্থ কর্তন না করিলে নিরীক্ষা অফিস কর্তন পূর্বক বিল পাশ করিবে।
৭। অধ্যাদেশের ধারা-৮ এর অধীনে আবেদনের ভিত্তিতে শুনানির ক্ষেত্রে কেবল সাক্ষ্যরে সংক্ষিপ্তসার, প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজন হইবে।
৮। এই অধ্যাদেশের অধীনে দন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কর্ম কমিশনের পরামর্শের প্রয়োজন হইবে না।